Saturday 27 February 2016

নাওমি ওয়াতানাবে : পরিশুদ্ধ বাংলায় বিশুদ্ধ জাপানি


ভদ্রমহিলার নাম নাওমি ওয়াতানাবে। তিনি জাপানি, জাপানের খ্যাতিমান কথাশিল্পী। রতন সিদ্দিকীর ভাষায়,
ড. মোহাম্মদ আমীন ও নাওমি ওয়াতানাবে
নোবেল পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। একুশে গ্রন্থমেলা উপলক্ষ্যে বাংলাদেশে এসেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের উপর গবেষণা করছেন। আমি প্রমিত বাংলা বানান নিয়ে কাজ করি, এটিই আমার প্রতি তাঁর আগ্রহের কারণ। তাই ড. রতন সিদ্দিকীর সহায়তায় শুবাচ-আড্ডায় আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন।
 
ভদ্রমহিলা আমাকে দেখে বিনম্র উচ্ছ্বাসে ডান হাত এগিয়ে দিলেন : আস্‌সালামুআলাইকুম। কেমন আছেন? আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ, আমার সৌভাগ্য। বাংলা বানান নিয়ে আপনার লেখা, আমাকে বাংলা শেখায় সহায়তা দিয়েছে। আমি আপনার লেখার কাছে ঋণী। 
আমি বিস্মিত। জাপানির মুখে এত সুন্দর বাংলা! কোনো জড়তা নেই্, প্রত্যেকটা বর্ণের প্রমিত উচ্চারণ, শব্দ আর বাক্যকে বাঙালি মাধুর্যে অনুপম করে তুলেছে। আমিও বাংলা এত শুদ্ধভাবে বলতে পারি না। কথা বললে চট্টগ্রামের আঞ্চলিকতা এসে যায়। কীভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। ওয়াতানাবে আমার দিকে একটি বই এগিয়ে দিলেন : আমার লেখা বই। জনাব, গ্রহণ করে ধন্য করুন।বইয়ের নাম ‘লেখকের চিঠি’, লেখক নাওমি ওয়াতানাবে। বাংলা ভাষায় ও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে লেখা জাপানি মহিলা নাওমি ওয়াতানাবের গল্পের বই। ভূমিকা পড়ে মুগ্ধ। নির্ঝর ভাষায় বাঙালি মাদকতা।  
বাংলা ভাষায় লেখা তাঁর অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে ‘যাপিত জীবনে আমার বাংলাদেশ’, ‘আমি কোথায় দাঁড়াবো, গনশিয়াল এবং তিনটি হতভাগ্য হাতির মৃত্যু কাহিনি’ উল্লেখযোগ্য। দেড়ঘণ্টা তাঁর সঙ্গে কথা বলেছি। একটা বিদেশি শব্দও তাঁর মুখ থেকে বের হয়নি। আমরা বলছি ‘ইউনিভার্সিটি’, তিনি বলছেন ‘বিশ্ববিদ্যালয়’।

No comments:

Post a Comment