ভালবাসা দিবসের কথা দিয়ে শুরু করি। আমার কথা নয়, আমি
গবেষণা করি, গদ্য লিখি, আমার ভালবাসার প্রকাশে কবির মতো নিবিড়তা নেই মগ্নতার,
মুগ্ধতা নেই বর্ণনার, আমি কবি নই, তাই ভালবাসার কথা হৃদয় দিয়ে ফুটলেও মুখ বা ভাষা
দিয়ে একলাইনও বের করতে পারি না। যা বের হয় তা আনুষ্ঠানিকতাভর্তি উপহারের মতো নিরস।
কিন্তু কবি পারেন, যেমন পেরেছেন ভালবাসার কবি সালাহাউদ্দিন আহাম্মদ। তৃপ্তিময়
মাদকতায় বাক্যে বাক্যে কী ঘোর নেশা ছড়িয়ে বসন্তের মতো প্রগলভতায় বলে দিলেন
ভালবাসার কথা :
"অশ্রুতে তোমার
শরীর ভেজাও
অনুভব করো আমায়;
লাজুক জ্যোৎস্না আমি
ভোর এনে দেবো তোমায়।" (প্রতিশ্রুতি/জলের
নামতা)
ভালবাসার কবি সালাহউদ্দিন তার কবিতায় শব্দের
ফাঁদে বড় মধুর আদরে আটকে দিলেন ভালবাসার
সব উচ্ছ্বাসকে! কত প্রাগাঢ় সংকোচে নিঃসঙ্কচিত্তে
শব্দেরা তার অনুগত হয়ে গেল। আমি অবাক হয়ে পড়ে যেতে থাকি- কবিতার পর কবিতা। কবিতায়
এমন মোহরস সৃষ্টি করতে পারা কবির অর্ন্তানুভুতির প্রাঞ্জলতাকে ফুটিয়ে তোলে। উপরের
লাইনগুলো শুধু ব্যক্তি নয়, শুধু ভালবাসা মাত্র নয়; এখানে কবির অভিব্যক্তির সুধা
ব্যক্তি হতে ব্যক্তির অন্তরে এবং অন্তর হতে বিশ্বে বিমর্জিত, বিভাসিত। তাই
ভালবাসার মাঝে কবির ভোরের স্বপ্ন শুধু নিজের জন্য নয়, পুরো মানবজাতির প্রতি উৎসর্গিত।
এমন কেবল কবিরাই পারে, তাই কবিরা আমৃত্যু শিশু।এমন শিশুকে বুঝতে হলে যে
বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষ আর হৃদ্যিক কাব্যিকতা প্রয়োজন তা অনেকের নেই। এজন্য, আমাদের
দেশে কবিতার পাঠক তুলনামূলকভাবে কম। এটা কবিতার লজ্জা নয়, বরং যারা কবিতা বুঝেন না তাদের লজ্জা। হীরা এক আউন্স
যথেষ্ট, লোহা একমণও নয়। কবিতায় যিনি বা যারা সাবলীল হয়ে উঠার জন্য শ্রম দেন না,
তেমন পাঠক, কবিরা যতই প্রত্যাশা করুন, কবিতা কখনও চায় না। কবিতার মতো গর্বিত
নান্দনিকতাময় পাঠকই কেবল কবিতার কাম্য।
যাই হোক, ফিরে আসি আসল কথায়। আজই পেলাম কবি
সালাহউদ্দিন আহাম্মদরে দুটো কাব্য : ‘জলের নামতা’ এবং ‘একত্র অনুভব’। মলাট খুলে
কোনটা আগে পড়ব ভাবতে ভাবতে হাত এগিয়ে যায় চোখসহ জলের নামতায়। বসন্তের এমন জল
প্রশান্তের গোলাপে রমণীর মাথার কৃষ্ণ বেণী যেন। এমন জল এবং এমন নামতা, সর্বোপরি
এমন জলের নামতা আকৃষ্ট করার মতোই। আমি আকৃষ্ট হয়ে যাই জলের নামতায়, সালাহউদ্দিন
আহাম্মদের কবিতায়। প্রথম কবিতায় প্রবল ঝড়, ঝড় নয়; মনোহরী স্বর, সবুজ সাদায় মেঘে
মেঘে বিস্ময়ের অনুস্বর।
“কীসের জল বেশি?
মেঘের না চোখের?
কার পরিধি বড়?
জলাশয় না অনুভূতি?” প্রশ্নের পর প্রশ্ন করে
প্রশ্ন দিয়ে এবং প্রশ্ন দিয়েই শেষ করেলেন কবি, তার জলের নামতা।
“অনুভূতির চেয়ে বড় আর কি (কী) হতে পারে?
কান্নার চেয়ে বেশী (বেশি) জল কার হতে পারে?”
(জলের নামতা)
জীবন আর অনুভূতির এমন অনুভূতিহীন সাম্রাজ্যের আপতিত
নিপতনে প্রশ্ন ছাড়া আর কী আছে! কিছু নেই, শেষ নেই, শুরুও কী আছে? কবি ঠিকই বুঝতে
পেরেছেন, জীবন রহস্যের পার্থিব চঞ্চলতায় আধ্যাত্মিক বিমূর্ততার উত্তরহীন প্রশ্ন। এটি
তার দার্শনিক অনুমেধার বিজ্ঞপ্রহর; এখানে প্রশ্ন ছাড়া আর কিছু নেই। উত্তর চাওয়া
মানে আরও বড় প্রশ্নের জন্ম দেওয়া। অত বোকা কবি নন। তাই তিনি উদাস কণ্ঠে বলে ওঠেন :
“এক নীল স্বপ্নের পূজক
তুমি কই?
এতো (এ তো) দেখি শূন্য দারোয়ান।” ( তুমি-১, জলের
নামতা)
সালাহউদ্দিন আহাম্মদের কবিতায় প্রেমের নিবিড়তা
আবেগের মুর্ছনায় প্রকৃতি হয়ে ওঠে গগন কোণে মনের অভিসারে প্রেমের কুহকে। প্রেমের সঙ্গে প্রকৃতি আর প্রকৃতির সঙ্গে
প্রেম ও কৃষ্ণায়ন-দ্রোহের জটিল মিলনে ভারী ওস্তাদ তিনি। সোহাগ পরিসরে তিনি যতই
আবেগময় হোক না কেন, শব্দচয়নে বেশ সচেতন। এমন প্রেমমুখর শব্দ সচেতনতা সালাহউদ্দিনের
কবিতাকে আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বে মন্দ্রিত শাড়ি পরিয়ে রেখেছে স্নিগ্ধ রমনীর পুষ্ট
বক্ষে। এ শাড়ি নিটোল যাতনায় কাছে যাবার আকুতিকে সীমাহীন ক্ষুধায় বন্য করে তোলে এবং, আবার সংযত চেতনায় করে রাখে অমায়িক, চোখে জ্বলে উঠে চোখ, মনে ঝাপটা মারে খনখনে ঢেউ।
প্রেমকুহরে পাশব বন্যতা ঢেকে - সখার সঙ্গে মিলিত হতে পারার, সখাকে আকৃষ্ট করতে পারার
কৌশলই তো প্রেম। নইলে কী পার্থক্য প্রেম আর ধর্ষণে। সালাহউদ্দিন আহাম্মদ জানেন, ভালাবাসা
কী। তার কবিতায় মানুষের ভালবাসা সীমাহীন সাম্যতায় বিশাল হয়ে ওঠে। কোনো অস্ত্র নয়,
সম্পদ নয়, ভালবাসা এবং ভালবাসাই তার কাছে প্রথম, প্রধান ও অম্লান অবিরাম :
“আকাশকে বিবর্ণ করার শক্তি
শুধুমাত্র ভালোবাসাই রাখে।” (বিচ্ছিন্ন হৃদয়, জলের
নামতা)।
সালাহউদ্দিন আহাম্মদের কবিতা বর্ষণমুখর রাতের
প্রাণোচ্ছ্বল টিন, ঝমঝম শব্দে মায়ের আদর, প্রেমিকার সাদর, দেশের নৈকট্য আর মনের
প্রশান্তি। হৃদয়কে ভাষায়, অক্ষরকে শব্দের সজ্জায় বাক্যে বাক্যে বেশ কৌশলে বসাতে
পারেন তিনি। লাইনের পর লাইন, ছেদের পর বিচ্ছেদ - আবার শুরু হঠাৎ, ঠিক কপোত-কপোতির
উন্মুখ ঠোঁটাঠুটির মতো। এমন মোহকল্পতায়
তার কবিতাগুলো মাথায় কেমন ঝিমঝিম বর্ষায় রিমঝিম হয়ে ওঠে। মানবস্পন্দনের অত্যন্ত
স্পর্শকাতর বিষয়গুলোও তার কবিতায় প্রেম-বেদনায় সোঁদাগণ্ধের মাটির মতো গ্রামীণ
কণ্ঠে বাঁশী হয়ে ওঠে রাখালের কান্নায়। তিনি শহুরে, কিন্তু মন পড়ে থাকে গ্রামের সে
সবুজ প্রান্তরে। যেখানে তার মায়া বালি হয়ে নাকে ঢুকে, শহরের মতো অ্যাজমা হয়ে নয়।
তিনি আবার ফিরে যেতে চান মাটির মাঠে, কাঠহীন খাটে। স্পষ্ট আবেগ বিরল প্রকাশ
কবির :
“মেঘলা মহৎ কবিতার উদ্দেশ্যে এই মাটি, এই সবুজ ঘাস
পেরিয়ে
তারপর সাজানো দোকান হতে লবঙ্গের ঘ্রাণ শুঁকে
শুঁকে অবশেষে
শাওনের ধারার মতো বিশাল বেদনা হয়ে ঝরেছি নিঃশব্দে
হঠাৎ।” (বেদনায় বেঁধেছি হাত, জলের নামতা)
‘একত্র অনুভব’ নাম দেখে উপন্যাস মনে হয়েছিল,
পুরুষালী নাম। উল্টে দেখি উপন্যাস নয়, কাব্য। সারি সারি কবিতা টিয়ার সজীবতায় সবুজে
সবুজে পতপত। ‘জলের নামতা’র চেয়েও আরও ঘন, আর বাঙ্ময় আবেগের রোদ। এখানে সন্ধ্যা যেন
থেমে আছে রাতের জন্য আর রাত থেমে আছে সন্ধ্যার কুহকতায়। রূপোলি বিকেলের মাঝে মানুষ
আর প্রকৃতির নৈকট্যের মতো সালাহউদ্দিন আহাম্মদের কবিতাগুলো আমাকে নিবিড় করে নেয়
কবিতার উষ্ণবুকে, শীৎকার ব্যাকুলতার অধরে। আমি নধর হয়ে চুষের যাতনায় অস্থির হয়ে
উঠি কবির কবিতায়। তো এমন একটা কাব্যের নাম
‘একত্র অনুভব’, অনেকটা ছেলের নামে পুরুষ। হোক না, তাতে কী! একটু ভিন্নতা তো
প্রয়োজন। কাব্যে, কবিতায় এত ভাবাভাবি কী! কবির ভাষায় :
“স্বপ্নের সুদে ভালোবাসা ধার নিলাম।
---------------------
লাভ ক্ষতির হিসাব কষে ভালোবাসা হয় না।”
(ভালোবাসার পাটিগণিত, একত্র অনুভব)।
ভেবেছিলাম পড়ে পড়ব। কিন্তু পড়ে আর পড়া হলো না,
পড়েই শেষ করতে হলো। খেতে ডাকছিল বার
বার, বাধ্য হয়ে কাব্য নিয়ে খেতে গেলাম। কবিতার
সাথে দুপুরের খাওয়া- অনবদ্য অনুভুতি। আলাপ করতে গিয়ে থেমে যাই, সালাহউদ্দিন
আহাম্মদের কথাগুলো মনে পড়ে যাই : “আজ প্রথম বই মেলায় যাচ্ছি পুরো পরিবার। ছেলেমেয়েদের বায়না একশ বই কিনবে প্রত্যেকে।আমি বলেছি যতগুলি পছন্দ হয় কিনো বাকি সংখ্যা আমার বই দিয়ে মিলিয়ে দিব।ওরা বলল তুমি পচা লেখো।কবিতা কিছু হয়না, কবিতা হবে হাট্টিমাটিম টিমের মতো। ওদের পছন্দ শাহরিয়ার খান, জাফর ইকবাল, আহসান হাবীব, আনিসুল হক, ইমদাদুল হক মিলন, হূমায়ুন আহমেদ।আমি কবির চান্দের গুল্টু মামার বাঘ শিকারের বিষয়ে আগ্রহী করে যাচ্ছি।ওদের কথা মেলায় যাই দেখি তোমার বন্ধু আমাদের জন্য কেমন লিখেছে।” কয়েকটা লাইন মাত্র, এটি পড়ে বুঝে নিলাম
সালাহউদ্দিন আহাম্মদ কবিতার মতো গদ্যেও সাবললীল। শব্দেরা এখানেও তার অনুগত। কবির আক্ষেপ, আগামী প্রজন্ম কবিতা হতে দূরে সরে যাচ্ছে, মানে তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক মান ক্রমশ নিচে নেমে যাচ্ছে। বস্তাপচা উপন্যাসের ভীড়ে পচে যাচ্ছে আগামী প্রজন্মের সাহিত্যমন। আহমদ ছফার ভাষায় বলা যায়, পাকিস্তানিরা বাংলা ভাষার যা ক্ষতি করেনি, তার সহস্রগুণ করে যাচ্ছে হুমায়ুন মার্কা লেখকেরা। এদের প্রতিহত করতে না-পারলে বাংলা ভাষার মান আরও কমে যাবে।
‘একত্র অনুভবে’ এখানে একটির পর একটি কবিতা নতুন
বিষয় নেয়ে আবির্ভূত হচ্ছে। ভালবাসার পর প্রেম, তারপর বেদনা, দ্রোহ, সমাজ, রাষ্ট্র,
জীবন, প্রাত্যহিক জীবন, সাংঘর্ষিকতা- এ এক বিচিত্র সংযোজন। হয়তো এজন্যই কবি নাম
দিয়েছেন ‘একত্র অনুভব’।সালাহউদ্দিন আহমদের এ কাব্যটি আসলেই একটি ‘একত্র অনুভবের’
বিশাল সংযোজন। জন্ম হতে মৃত্যু তারপর আবার জন্ম হতে শুরু আবার মৃত্যু – এভাবে অন্তহীন
বিষয়ের অবিশ্রান্ত প্রকাশ। দর্শন আর মৌনতায় প্রকট হয়ে উঠেছে তার ভালবাসা :
“ভালোবাসা পানির মত
কঠিন
তরল বায়বীয়”। (ভালোবাসার নামতা)
এত চমৎকারভাবে, এত সহজ ভাষায় শিশুদের মতো নামতায়
নামতায় ভালবাসাকে কী অমোঘ নির্ঘুমতায় ঢেকে দিয়েছেন কবি সালাহউদ্দিন আহাম্মদ, সত্যি
মুগ্ধ না-হয়ে পারা যায় না। প্রশ্ন সমাচ্ছন্নতায় কবির কাছে জীবন আর মৃত্যু দুটোই
সমান। দুটোই অশেষ প্রশ্নের বিশেষ পরাবাস্তব। তাই জীবনের মতো ‘মৃত্যু’কেও তিনি
প্রশ্নের পর প্রশ্ন দিয়ে ভালবাসা দিবসের লাল-নীল-হলুদ-সবুজ-কমলা এবং সবার নিলয়
মিশ্রণে সাজিয়েছে প্রশ্নে প্রশ্নে :
“মানুষ ভাবে মৃত্যু অন্ধকারের মতো
আসলে কি তাই?
আমি ভাবি আলোকিত-সাদা কিংবা হলুদ।
নীল বা কালো - - -।” (মৃত্যু, একত্র অনুভব)।
ভালবাসার প্রবল আবেগেও কবি সমাজ সচেতন, মানুষের
প্রতি, সমাজের প্রতি, ব্যক্তির প্রতি, রাষ্ট্রের প্রতি এবং পরিবার ও নিজের প্রতি
সম্পূর্ণ সজাগ। এ বিষয়ে তার অবস্থান কবিতায় কবিতায় জীবনের মতো পরিষ্কার, এ বিষয়ে উচ্ছ্বল তার কবিতা নিম্নগ অভিমানে। যেখানে মানবতা
বঞ্চিত হয়, লাঞ্ছিত হয় সাধারণ, সেখানিই তিনি ঘৃণা ছুড়েন কবিতায় কবিতায়। তার
সমাজ-জীবনমূলক কবিতাগুলো নান্দনিক ঘরণায় সাধারণ মানুষের পক্ষে উচ্চকিত। মানবতার কাছে
পাশবতার পরাজয়ই তার এসব কবিতায় বিবর্ধিত। তাই তিনি ভালবাসার কবি, প্রকৃতির দ্রোহ এবং মননশীলতার গ্রন্থ। ‘একত্র অনুভব’ কাব্যের ‘দৃষ্টিভঙ্গি’ কবিতায় কবির ক্ষোভ ফুটে
উঠেছে অগ্নিপ্রমত্ততায় :
“ইচ্ছে করে হাতে যা পাই তা দিয়েই দেই (দিই) কোপ
শালা তোদের।”
ভালবাসার প্রবল স্রোতে নান্দনিকতার কবি
সালাহউদ্দিন আহাম্মদ কী মারাত্মক যাতনায় দ্রোহী হয়ে উঠেছেন তা সহজে অনুমেয়। সালাহউদ্দিন
সাহসী, প্রেম আর দ্রোহ এবং প্রকৃতির সঙ্গে নিবিড় সখ্যতা
তার কাব্যের উপাদান, জীবনের শ্বাস এবং আজন্ম বিশ্বাস। তার এ বোধ হৃদয়ের অতল হতে কলম বেয়ে নেমে আসে শব্দ হয়ে। কিন্তু শব্দগুলো শব্দের ইচ্ছেমতো নয়, কবির ইচ্ছেমতো বেশ অনুগত ভাবনায় বসে যায় পরপর সজ্জিত বাগানের উচ্ছ্বল অরণ্যের মতো আকর্ষনের হন্যে। আহ কী নিবিড়, কী গভীর এ সজ্জা! মানুষের হাতে প্রকৃতির বিভোর প্রেমের মতো পরম গভীর, চরম নিবিড়ভাবে সাজিয়েছেন সালাহউদ্দিন। কারণ তিনি বিশ্ব জয় করতে চান ভালবাসা দিয়ে, মানুষের পাশবতা পরিশুদ্ধ করতে চান নান্দনিকতা দিয়ে :
তার কাব্যের উপাদান, জীবনের শ্বাস এবং আজন্ম বিশ্বাস। তার এ বোধ হৃদয়ের অতল হতে কলম বেয়ে নেমে আসে শব্দ হয়ে। কিন্তু শব্দগুলো শব্দের ইচ্ছেমতো নয়, কবির ইচ্ছেমতো বেশ অনুগত ভাবনায় বসে যায় পরপর সজ্জিত বাগানের উচ্ছ্বল অরণ্যের মতো আকর্ষনের হন্যে। আহ কী নিবিড়, কী গভীর এ সজ্জা! মানুষের হাতে প্রকৃতির বিভোর প্রেমের মতো পরম গভীর, চরম নিবিড়ভাবে সাজিয়েছেন সালাহউদ্দিন। কারণ তিনি বিশ্ব জয় করতে চান ভালবাসা দিয়ে, মানুষের পাশবতা পরিশুদ্ধ করতে চান নান্দনিকতা দিয়ে :
“ধ্যানে ও জ্ঞানে
মননে ও শরীরে
সময়ে ও সমাজে
ভালোবাসি
ভালোবাসি”। (ভালোবাসি, একত্র অনুভব)
সালাহউদ্দিন আহাম্মদের কবিতার বই দুটো পড়ে মুগ্ধ
হলাম। নতুন আঙ্গিকে চিরন্তন ভালবাসার সজল প্রকাশ এবং সলাজ বিকাশ গভীর রাতের নীরব
ভাবনা যেন। এমন পরিশ্রুত তমাসন্নতা কার না ভালো লাগে। তাই আমারও ভালো লেগেছে। কয়েকটি
মুদ্রণ প্রমাদ ছাড়া আর কোনো ত্রুটি আমার চোখে পড়েনি।প্রমিত বানানে আর একটু সজাগ
থাক আবশ্যক। আসলে-
ভালোই লিখেন সালাহউদ্দিন,
প্রেমের দ্রোহে অনল তিনি-
অনাবিল প্রতিদিন।
[ ব্যস্ততার জন্য বানান দেখতে পারিনি, বানান ভুল থাকলে মন্তব্য কলামে দেবেন,সম্মানিত পাঠক]
কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা আমার জানা নেই।ভালোবাসা রইল।
ReplyDelete